১
ডাইমেনশন বা মাত্রা হল কোন বস্তুর অবস্থান নির্ণয় করার জন্য যতগুলো স্থানাঙ্ক প্রয়োজন সেটা । অথবা বস্তুর কাঠামো সম্পর্কে ধারণা পাবার জন্য যতগুলো বিন্দু প্রয়োজন । কোন বস্তুর অবস্থান নির্ণয় করতে দুইটি মাত্রার প্রয়োজন হলে ঐ বস্তুর জন্য মাত্রা দুই । যেমন মেঝেতে কোন বস্তুর অবস্থান নির্ণয় করতে দুই মাত্রার প্রয়োজন। আবার আকাশে পাখি উড়লে তার অবস্থান নির্নয়ের জন্য তিনটি মাত্রা প্রয়োজন । মাত্রাগুলো হলো দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা । এক্ষেত্রে আমরা পাখির অবস্থান শুধুমাত্র দুইটি মাত্রা (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ) দিয়ে পরিমাপ করতে পারবোনা । অবশ্যই (2+1) মাত্রা দৈর্ঘ্য , প্রস্থ এবং উচ্চতা প্রয়োজন । একটা বস্তুকে সংজ্ঞায়িত করতে যতগুলো মাত্রা প্রয়োজন তার কম মাত্রা হলে বস্তুর সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবেনা ।
২
মূল প্রসঙ্গে আসি , মাত্রার কাজ হলো কোন প্রাণীর অবজারভেশন সীমা নির্ধারণ করে দেয়া ।

একটি পাখির আকার বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই তিনটি মাত্রা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে । এখন আপনি যদি 2D জগতের প্রানী হন তাহলে আপনি নিচের চিত্রের মত পাখির পায়ের অংশ দেখতে পাবেন, অর্থাৎ ভূমির স্পর্শক বরারব অংশ দেখতে পাবেন । এবং আপনার কাছে পাখির উচ্চতা বলে কিছু নেই ।

1D মাত্রার প্রাণীরা শুধুমাত্র পাখির পা দেখতে পাবে
আমরা তিনমাত্রার জগতে অবস্থান করি । অর্থাৎ কোনো বস্তুর অবস্থান বা বস্তুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে হলে তিন মাত্রা হলে যথেষ্ট । দেখুন আমাদের শরীরের আকার – আকৃতি বুঝতে হলে তিন মাত্রা দিয়ে বুঝতে হবে । তিন মাত্রা বা 3D থেকে কম হলে হবে না । তাই বলে যে তিন মাত্রার মধ্যে এই জগত সীমাবদ্ধ সেটা ভাবলে চলবে না । তিন মাত্রার থেকে অধিক মাত্রা রয়েছে ।
” আমরা জগৎ সম্পর্কে সব কিছু জানি
এমনটা ভাবার কিছু নেই ।
আবার জগৎ সম্পর্কে কিছুই জানি না
এমনটা ভাবারও কিছু নেই । ”
আপনি যদি আপনাকে জানতে চান অর্থাৎ আপনার আকার প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে 2D মাত্রা থেকে 3D মাত্রা দ্বারা ব্যাখ্যা করলে অধিক কার্যকর ফলাফল পাবেন । ফলকথা , মাত্রা যতো অধিক হবে ফলাফল নিখুঁত ততো বেশি হবে । যেমন ইলেকট্রন কণা স্পেসটাইমে ( 3+3 ) মাত্রার সাথে একটি ক্ষেত্রের সাপেক্ষে চলে । আমরা তিন মাত্রায় অবস্থানরত প্রাণী তাই ইলেকট্রনকে বুঝতে পেরে ও বুঝিনা । তিনের অধিক মাত্রা থাকলে প্রশ্ন এসে দাঁড়ায় আমাদের মহাবিশ্বে মোট মাত্রা কত গুলো ? খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল প্রশ্ন । কিছুক্ষণ আগে জগত সম্পর্কে আমার মতামত ব্যক্ত করেছি , সেটা মনে করুন । !
” আমরা জগৎ সম্পর্কে সব কিছু জানি
এমনটা ভাবার কিছু নেই ।
আবার জগৎ সম্পর্কে কিছুই জানি না
এমনটা ভাবারও কিছু নেই । ”
মহাবিশ্বে আসলে মাত্রা কতগুলো আছে , আমি সেটা বলতে পারবো না , কেউ পারবে না । আমি কিছু তত্ত্বের মতামত বলবো কিন্তু নিশ্চিত করে বলবো না । কারণ আজকে n মাত্রা বললাম দুইদিন পর ( n +N ) তম মাত্রার সন্ধান মিলবে । কেননা বিজ্ঞানের একটি মধুময় সৌন্দর্য হলো বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত নিজেকে উন্নত করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত ।
৩
আগে আমরা মহাবিশ্বকে তিনটি মাত্রার জানতাম । কিছুদিন পর আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব আবিষ্কারের পর মাত্রার ধারনা পাল্টে দাঁড়ালো ( ৩ +১ ) চার মাত্রা । আবার আইনস্টাইনের তত্ত্বের কিছুদিন পরে স্ট্রিং তত্ত্বের জন্ম হলে তখন মহাবিশ্বের মাত্রা দাঁড়ালো ১০ । তারও কিছুদিন পর ১৯৯৫ সালে M তত্ত্বের জন্ম হলো, M তত্ত্ব মহাবিশ্বের ১১ মাত্রার ধারণা দিল । একজনের পর অন্যজনও লম্বা লাইন দিয়ে দাঁড়ালো । পিছনের দিকে Bosonic string theory মিটমিট করে হাসতে লাগলো আর বলতে লাগলো , ” দাঁদা মহাবিশ্বের মাত্রা মোট 26 টি ” ।
তাই আমি নিশ্চিত করে বলবো না মহাবিশ্বের মাত্রা 10, 11 বা 26 টি । পিছনে দাঁড়িয়ে আবার কে হাসছে , সেটা কে বা জানে । নতুন তত্ত্ব আসলে পুরোনো তত্ত্ব বাতিল হয় এমনটা ভাবলে ভুল ভাবছেন । নতুন তত্ত্ব এসে নতুন জ্ঞান বৃদ্ধি করে পুরোনো তত্ত্বকে আরো বেশি মজবুত ও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে ।
এই বইয়ে আমরা 4 টি মাত্রা সম্পর্কে জানবো । ( 0- 4 ) ডাইমেনশন পর্যন্ত আলোচনা করবো ।
আপনার মনে কী প্রশ্ন উঁকি দেয় না ,? ০ এর নিচে কোনো মাত্রা আছে কী না।
জটিল প্রশ্ন সরাসরি না করতে পারবো না । আবার আছে এটাও বলতে পারবো না । যা দেখি নাই সেটা হ্যাঁ বললে যেমন সত্য / মিথ্যা হতে পারে আবার না বললেও একই বিষয় ।
যেহেতু নেচারের ভাষা গণিত এবং গনিত আমাদেরকে বলে যে মহাবিশ্বের মাত্রা negative হতে পারে । অনেকটা সংখ্যা রেখার মতো । সংখ্যার positive মান থাকলে negative মান না থাকার সম্ভাবনা কম ।
এটা নিউটনের বলবিদ্যা শিখার সিরিজ তাই নিউটনের বলবিদ্যা শিখতে আমাদের সাথে থাকুন।
তথসূত্রে : https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE